শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজ শনিবার | ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নিকট শরীয়তপুর বাসীর পক্ষ থেকে খোলা চিঠি

বুধবার, ১০ জানুয়ারি ২০১৮ | ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ | 840 বার

মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, পদ্মা, মেঘনা, কীর্তিনাশা বিবৌধ, ইতিহাসখ্যাত হাজী শরীয়তউল্লাহর নামাঙিক সমস্যা সঙ্কুল জনপথ শরীয়তপুরের ১৬ লক্ষ জনতার পক্ষ্য থেকে আপনাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিচ্ছি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আপনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনার ঘোষিত দিন বদলের সনদ ও ভিশন ২০২১ এ মহা পরিকল্পার বদৌলতে আমরা নিম্ম মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হওয়ার দ্বার প্রান্তে উপনতি। শত প্রতিকুল অবস্থা মোকাবেলা করে আপনি বংলাদেশকে উন্নয়নের মহা সড়কে এগিয়ে নিয়ে চলছেন। আপনার নেতৃত্বে দেশ সমৃদ্ধ, দেশের মানুষ দুধে ভাতে থাকবে, এ প্রত্যাশাই আমরা করতেই পারি। আপনার নিকট শরীয়তপুরবাসী কৃতজ্ঞ। আমরা ¤্রদ্ধাবনত চিত্তে আপনাকে সাধুবাদ জানাই দেশীয় অর্থে পদ্মা সেতু নির্মানের জন্য । পদ্মা সেতুর বদৌলতে শরীয়তপুরের অর্থ সমাজিক অবস্থার বদলে যাচ্ছে এবং বদলে যাবে। উত্তাল পদ্মার ভাঙ্গন থেকে শরীয়তপুর নামীয় জনপদকে রক্ষার জন্য আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা শরীয়তপুরবাসীর হৃদয়ে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে। আপনি ইতিহাসের রাখাল রাজা, স্বাধীনাতার স্থাপতি, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কন্যা। আপনার মাঝে আমরা বন্ধুর ছায়া বঙ্গুবন্ধুর মায়া, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ খুঁজে পাই। একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ বির্ণিমানের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৫ আগষ্ট ট্রাজেজির মাধ্যমে পরাজিত শক্তি সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ তা হতে দেয়নি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যত দিন বাঙ্গালী থাকবে ততদিন ষড়যন্ত্র কারীদের কোন স্বপ্নই বাস্তবায়িত হবে না। কারণ বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভাল বাসে। বাংলার মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুর নাম লেখা আছে। এ লেখা মুছবেনা, এ লেখা পুড়বেনা, এ লেখা চিরদিন রয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু পথ হারা, দিক ভ্রান্ত একটি জাতীকে পথে দীশা দিয়েছেন। একটি লাল-সবুজের পতাকা দিয়েছেন। একটি স্বাধীন স্বার্বভোম দেশ দিয়েছেন। তার নিকট এ জাতি চির ঋণী। এ ঋণ শোধ করার মত নয়। এ ঋণ শোধ হবে না। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী , গোপাল গঞ্জের টুঙ্গী পাড়ায় সেদিন বঙ্গবন্ধু জন্ম না নিলে বাংলাদেশ নামীয় দেশটি বিশ্ব মানচিত্রে কোন দিন স্থান পেতনা। বঙ্গবন্ধুর জন্য এ বাংলাদেশ। তিনি চেয়েছিল তার স্বপ্নরে সোনার বাংলাদেশ গড়তে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে একটি যুদ্ধ বিব্বস্ত দেশ গড়ার কাজে বঙ্গবন্ধু যখন আতœা নিবেদিত , তার প্রজ্ঞা, মেধা, শ্রম দিয়ে দেশটি সাজানোর কাজে নিয়োজিত ঠিক সে সময়ে পরাজিত শক্তি তাকে আমাদের মাঝ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ওরা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু নাম মুছে দিতে কিন্তু, ওরা তা পারেনি। ওরা যুগে-যুগে, বারে বারে পরাজিত। ওরা এ দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ব্যাহত করতে চায়। ওদের প্রতিহত করতে আপনার দিক নির্দেশনা, আপনার নেতৃত্ব আপনার পরিশ্রম, আপনার মেধা সারা বিশ্বে প্রসংশীত। আপনি শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, আপনি সারা বিশ্বের নেত্রী। আপনার উন্নয়ন, অগ্রগতি দেখে আবাক বিস্ময়ে বিশ্ব তাকিয়ে আছে। কিন্তু অতি পরিতাপের বিষয় এ উন্নয়ন অগ্রতির ঢেউ শরীয়তপুরে এসে মন্থর হয়ে যাচ্ছে, সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে পড়ার জন্য । মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, শরীয়তপুর জেলা চির অবহেলিত তা আপনি জানেন। আপনার শাসনামলেই শরীয়তপুরের কিছু উন্নয়ন অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালে আপনার শাসনামলে তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর প্রয়াত জননেতা আব্দুর রাজ্জাকের প্রচেষ্টায় আপনার সু-দৃষ্টি ও সুবিবেচনায় শরীয়তপুরে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছিল। সে সময় শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগা নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল। যা আজ বিধ্বস্ত। আপনি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ না করলে কিছুতেই উপলব্দি করতে পারবেনা যে, শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, সড়ক অবকাঠামো ভেঙ্গে পড়ছে। বিধ্বস্ত ভাঙ্গা রাস্তা এখন শরীয়তপুরের মানুষের দুঃখ। সারা শরীয়তপুরের চিত্র প্রাই একই। জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড সকল পর্যায়ের সকল সড়কই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ সব বিধ্বস্ত ভাঙ্গাচুড়া সড়ক দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে শরীয়তপুরের মানুষ দুঃভরাক্রান্ত হৃদয়ে চলাচল করে। এটা দেখার কেউ নেই। প্রশাসন ও দেখছেন না , জনপ্রতিনিধিরাও দেখছেন না । অবস্থা দিনের পর দিন শুধু খারাপই হচ্ছে। ভাল কিছু চোখে পরছেনা। মাননীয় নেত্রী, শরীয়তপুরের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতো। শরীয়তপুরের মানুষ আপনাকে ভালবাসে, আওয়ামীলীগ কে ভালবাসে, নৌকাকে ভালবাসে, নৌকা মার্কয় তারা ভোট দেয়, আওয়ামীলীগকে তারা ভোট দেয়, আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে তারা ভোট দেয়। স্বাধীনতার পর থেকে কোন নির্বচনেই শরীয়তপুর থেকে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী পরাজিত হয়নি, নৌকা মার্কা পরাজিত হয়নি, নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর সাথে, আপনার সাথে, নৌকার সাথে, আওয়ামীলীগের সাথে ,শরীয়তপুরের মাটি মানুষের আত্মার সম্পর্ক। এ সম্পর্ক চিরায়েত এ সম্পর্ক অকৃত্রিম, এ সম্পর্ক অটুট। এ সম্পর্কের জোরে আপনার নিকট ১৬ লক্ষ জনতার পক্ষে সবিনায় অনুরোধ করছি, আপনি শরীয়তপুরের দুঃখ ভাঙ্গা বিধ্বস্ত রাস্তা ঘাট সংস্কার করে শরীয়তপুরের দুঃখ দুর্দশা লঘব করুন। মাননীয় নেত্রী, আপনি নিশ্চই অবগত রয়েছেন যে, আমরা আপনাকে ৩ জন এম.পি,একজন সংরক্ষিত মহিলা এম.পি ৫জন উপজেলা চেয়ারম্যান, ৬জন পৌরসভা চেয়াম্যান সহ অসংখ্য চেয়ারম্যান, মেম্বার উপহার দিয়েছি। স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল নির্বাচনে সকল যুগে, সকল সময়ে শরীয়তপুরের মানুষ আওয়ামীলীগের নৌকায় , বঙ্গবন্ধুর নৌকায়, শেখ হাসিনার নৌকায় ভোট দান করেন। এ অবস্থায় শরীয়তপুরের রাস্তা ঘাটের এত দুরবস্থা সত্যি দুংখজনক। আমাদের এ দুঃখলাঘবে আপনার জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন ও সাহায্য সহযোগিতা কামনা করি। আপনার হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা সম্ভব না। অবস্থা এতই খারাপ যে, তা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। আমাদের জনপ্রতিনিধিগণ আপনার নিকট সঠিক বর্তা দেয় কী-না তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ আপনার নিকট শরীয়তপুরের দাবী দাওয়া নিয়ে গেলে তা পুরণ হবে না এটা আমরা মানতে চাইনা এবং বিশ্বাস করিনা। আমাদের বিশ্বাস আপনার নিকট ঁেপৗছালে আমাদের এ সমস্যার সমাধান অনেক আগেই হয়ে যেত। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আমরা শরীয়তপুর বাসী বড় হতভাগা। আমাদের দুঃখ, দুর্দশা, সমস্যা, সম্ভাবনা, চাওয়া পাওয়া, অভাব অভিযোগের কথা আপনার নিকট কেউ বলে না, যদি বলতো তা হলে আপনার মাধ্যমে আমাদের অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যেত। তাই আপনার নিকট আবেদন, আপনি স্বউদ্যোগে স্ব-প্রনোদিত হয়ে আমাদের দঃখ দুর্দশা দুরীকরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা অতি কষ্টে যাতায়াত করি। আমাদের শরীয়তপুরের প্রধান যোগযোগ মাধ্যম ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা। এ গুলো বিধ্বস্ত ভাঙ্গাচুড়া রাস্তা দিয়ে এখন আর চলাচল করতে পারছেনা। আমাদের দৈনান্দিন জীবন যাত্রা স্থাবিত হয়ে পড়ছে। এ সংক্রান্ত অনেক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে করো দৃষ্টি পড়েনি। আমরা দৃষ্টির বাইরেই থেকে গেছি। তাই আপনার দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য বাধ্য হয়ে ১৬ লাক্ষ জনতার পক্ষে, শরীয়তপুরবাসীর পক্ষে আপনার নিকট খোলাচিঠি লিখলাম। এ ছাড়া আর পথছিলনা। একজন সাংবাদিক হিসেবে স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়ার বার-বার বহুবার লিখেছি। কোন কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা। দিন-দিন অবস্থার অবনতিই হচ্ছে। মাননীয় নেত্রী , আমাদের সুযোগ্য জনপ্রতিনিধিগন আমাদের আশার বানী শুনিয়েই যাচ্ছেন। কিছুতেই কিছু করছেনা। তাদের চোখের সামনে হৃদপিন্ডের উপর এ সব রাস্তাঘাট। এ সব রাস্তা-ঘাট ব্যবহার করে তারা চলাচল করছেন। কিন্তু তাদের চোখে পড়ছেনা। যা খুব বেমানান এবং বেদনা দায়ক। যা নিয়ে ঘরে-বাইরে, রাস্তা-ঘাটে, ব্যপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ দুঃখ প্রকাশ কেেছন, কেউবা হতাশা ব্যক্ত করছেন। আসলেই বিষয়টি হতাশা ব্যঞ্জক, দুঃখজনক। এ দুঃখ ও হতাশা থেকে আপনি আমাদের উদ্ধার করুন। আপনার মাধ্যমেই আমরা এ দুঃখ ও হতাশা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। এ ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। আর কোন ওয়ে নেই। আপাতত আমাদের আর কোন দাবী দাওয়াত্ত নেই। একটা দাবী, আমাদের রাস্তা ঘাট, সংস্কার করে সড়ক যোগাযোগ নেট ওয়ার্ক সচল করা হউক, সড়ক অবকাঠামো সংস্কার করা হউক। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, বিষয়টি আপনাকে অবগত করানোর জন্য, আমি আপনার সাথে দেখা করতে ব্যর্থ হয়ে আমার নিজ পত্রিকায় খোলাচিঠি লিখলাম। এ ছাড়া পথ ছিলনা। একটি আঞ্চলিক দৈনিক প্রত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিনিয়ত মানুষের নানা কথা শুনতে হয়, জবাব দিতে হয, লিখতে হয়। আমাদের কাজ সমস্যা সম্ভাবনার কথা লিখা। সে লেখাতো আমরা প্রতিনিয়ত লিখেই চলছি। কিন্তু লিখলে কী হবে আমাদের লেখা কোন কাজে আসছেনা। এর প্রতি কারো তেমন নজর নেই। সবাই উদাসীন। বিষয়টি সবাই এড়িয়ে চলছেন। টেন্ডার হচ্ছে, ফান্ড হচ্ছে ইত্যাদি শুনতে শুনতে আমরা অতিষ্ট। আমরা আর আশার বাণী শুনতে চাইনা। আমরা চাই জরুরী কার্যকরী ব্যবস্থা। আশা করি আমার এ খোলাচিঠি আপনার চোখে পড়বে। আশা করি আপনি তা পাঠ করবেন। আশা করি আপনি বিষয়টি বুঝবেন এবং দেখবেন। আপনার মর্জি, আপনার সুবিবেচনা, আপনার সদয় হস্তক্ষেপ, আপনার সহায়তায় আমাদের একমাত্র দাবী। শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক পুনঃস্থাপন ও সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামে সংস্কার করে আমাদের প্রাণের দাবী পুরণ করে বর্ধিত করবেন। সবিনয় নিবেদক
¬¬¬¬
লেখক: সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম পাইলট, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক রুদ্রবার্তা, শরীয়তপুর। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ), ঢাকা।


সর্বশেষ  
জনপ্রিয়